২০১৭ সালের গরু কেনার গল্প – Sarwar Rupu

শুরুতেই ধন্যবাদ দিতে চাই ইরফান ভাইকে আমাকে নমিনেশন এবং চ্যালেন্জ করার জন্য। যদিও আমি ভাল গল্প বলতে এবং লিখতে পারি না তারপরো চেষ্টা করবো আজকে আপনাদের সাথে আমার ২০১৭ সাল এর গরু কিনার গল্পটা বলার জন্য। ২০১১ সালের পর থেকে আমরা বরাবরই ঈদের ৩ দিন আগে গরু কিনতাম ২০১৬ পর্যন্ত। গরু কিনার আগের দিন থেকে চিল্লা চ্চিল্লি শুরু করে দিতাম কখন গরু কিনতে যাবো আর গরু কিনার আগের রাতে তো ঘুমই আসে না আমার। এই জিনিস হয়ত সব গরু পাগলেরই হয়......... সকাল হতে না হতেই শুরু করে দিলাম আমার আম্মার সাথে কখন যাব হাট এ আর যেন উনি আমার বড় ভাইকে ডাকে তাড়াতাড়ি গরু কিনতে যাওয়ার জন্য। তো তারপর নাস্তা শেষ করে আমার বড় ভাই, সেজ ভাই আর আমি, আমরা ৩ জন মিলে গেলাম গাবতলি হাটে, আমরা সব সময় এই হাট থেকেই গরু কিনি যেহেতু এই হাটটা আমার বাসার কাছেই। শুরু করলাম গরু দেখা, বাজেট ছিল সেইবার ৮৫। ভালই গরু হাটে কিন্তু গরু মিলেই না।আস্কিং ছিল অনেক বেশি, দামে মিলে তো সাইজে মিলে না আবার সাইজে মিলে তো দামে মিলে না। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল তখন পর্যন্ত গরু মিলাতে পারি নাই যেগুলা পছন্দ হয় ১০ থেকে ২৫ এর গ্যাপ। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল জীবনের প্রথম এতক্ষণ ঘুরলাম তাও গরু মিলাতেই পারলাম না। শেষে বাধ্য হয়ে বড় ভাই বললো চল বাসায় যাই আগামিকাল আসবো আবার।এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে!!!!! সবাই দেখলাম ক্লান্ত তাই আর কোন কথা না বাড়িয়ে চলে গেলাম বাসায় সেইদিনের মত। খালি হাতে হাট থেকে বাসায় যাওয়া যে কি কষ্টের তা আর বলে বুঝানো যাবে না। হজ্জ এর দিন সকাল হতে না হতেই বড় ভাইকে ডাকা ডাকি শুরু করলাম। নাস্তা খেয়েই দৌড় দিলাম হাটের উদ্দেশ্যে। হাটে ঢুকার পর বুঝতে পারলাম গতকালের চেয়ে আস্কিং কিছুটা কম এবং বেচা কিনাও বেশ ভাল। কয়েকটা গরু দামাদামি করার পরহঠাত একটা লাল রঙ এর গরু চোখে পরে। গরুর কাছে গিয়ে দেখলাম ভালই সুন্দর।বেপারি দাম চাইল ১২০ আমি শুরু করলাম ৭০ দিয়ে তারপর বেপারি বললো নিলে ১১০ দিয়ে নিতে এইভাবে বলতে বলতে আমার লাস্ট ৮৫ বেপারির ৯৫। এমন সময় বড় ভাইয়ের সাথে সাইডে গিয়ে আলাপ করছিলাম যে আর ২-৩ বাড়িয়ে এইটা নিয়ে নিব এমন সময় কয়েকটা সুযোগ সন্ধানী লোক হঠাত এসে ৮৮ দিয়ে গরুটা নিয়ে গেল।। মন চাইছিল......... থাক আর রোজার সময় গালি দিলাম না। এর পর শুরু হল তুমুল বৃষ্টি। তো আমি আর আমার বড় ভাই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে গরু দেখে দামা দামি করতে থাকি আর বুজতে পারি যে আস্তে আস্তে আস্কিং অনেক কমতেসে আর অনেক গরু ঢুকতেসে হাটে। তার পর একটা গলি দিয়ে যাওয়ার সময় উনাকে দেখি। আগে বের করে হাঁটাতে বলি। দেখার পর আমার আর বড় ভাই দুইজনেরই পছন্দ হয়। দাম চাইতেই বলে মামা ১২ টা গরু নিয়া আসছি আর ৫টা আসে বেইচা বাড়ি যামু। নিয়া যান।বললাম তাইলে বেচার মত দাম চাও বলল ১০৫ দিয়েন যা কিনা গত দিনের চেয়ে ১০-১৫ কম আস্কিং ছিল। ৭০ দিয়ে আমরা শুরু করলাম তারপর বেপারি বলল নিলে ৯০ দিয়ে নিতে হবে নাইলে দিবে না। আমার বড় ভাই ধুম করে ৭৫ বলে দিল। বেপারি বলল গতদিন নাকি ৮৫ দাম উঠসে, তাই এর উপরে বলতে হবে তার পরও আমি ১-২ করে ৭৮ বললাম। বেপারি মামা হাসি দিয়া বলল পারবে না। আমরা তখন চলে যাচ্ছিলাম হটাত আমি দৌড় দিয়ে পিছে এসে বললাম মামা শুধু শুধু বৃষ্টিতে না ভিজে গরুটা দিয়ে দাও নিয়ে যাই আমি আর ১ দিব মানে ৭৯। বেপারি তার ভাইদের নিয়ে এসে সেই মন মাতানো থাপ্পড় দিল আর বলল টাকা দেন(যেই থাপ্পড় দেখলে মন জুড়িয়ে যায় গরু পাগলদের :D ) আর দড়ি খুলে দিল। আর এভাবেই আল্লাহ মিলিয়ে দিল আমার ২০১৭ এর ভালবাসাকে। তো এই ছিল আমার ২০১৭ এর ভালবাসার গল্প।

২০১৭ সালের গরু কেনার গল্প – Faisal Islam

আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার ২০১৭ সালের গরু কিনার গল্প। আমরা সাধারণতো হজ্জ্ব এর দিন গরু কিনি,তো ওই বার যথারীতি আমি আমার ছোট ভাই সাথে মামাতো ভাইরা,সাথে এক মামা…